পবিত্র রমজানে মুসলিমদের জন্য বড় একটি ছাড় দিয়েছিল বৃটেনের বিভিন্ন কাউন্সিল। এ সময়ে মুসলিমদেরকে মাইকে আযান দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এই অনুমতির মেয়াদ রোজা শেষের সঙ্গে সঙ্গে গত রাত থেকে অনেক স্থানে শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে মুসলিমদের প্রবীণ ধর্মীয় নেতারা এই ব্যবস্থাকে যাতে স্থায়ী রূপ দেয়া যায় সেই চেষ্টা শুরু করেছেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডেইলি মেইল। এতে বলা হয়েছে, অনানুষ্ঠানিক ধারাবাহিক পাইলট কর্মসূচির অধীনে মাইকের মাধ্যমে প্রতিদিন বৃটেনে মুসলিমদেরকে মসজিদ থেকে আযান দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তারা সেই কাজটি করেছেনও। পবিত্র রমজানে মুসল্লিদেরকে নামাজের জন্য ডাকার এই অনুমোদন দেয়া হয়েছিল বিভিন্ন স্থানে।
বেশ কিছু কাউন্সিল এই আযানের অনুমোদন দিয়েছিল। কিন্তু তা শেষ হয়ে যাওয়ায় মসজিদের প্রবীণরা এখন এসব কাউন্সিলের কাছে আবেদন করার পরিকল্পনা করছেন। তারা আবেদন জানাবেন, রমজানের পরেও যাতে আযান দেয়ার রীতি স্থায়ীভাবে অনুমোদন দেয়া হয়। পূর্ব লন্ডনের নিউহ্যামের মিনহাজুল কুরআন মসজিদের ইমাম আল্লামা সাদিক কুরেশি বলেন, আযানের এই ধারা ভবিষ্যতেও আমরা অব্যাহত রাখতে চাই। একই সময়ে আশপাশের লোকজন বিরক্ত হওয়ার বিষয়টিও আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে। এ জন্য তাদেরও অনুমতি প্রয়োজন আমাদের। যদি এসব প্রতিবেশী সন্তুষ্ট থাকেন, আমাদেরকে অনুমোদন দেন, তাহলে আমরা আবেদন শুরু করবো। নিউহ্যাম কাউন্সিল আমাদেরকে অনুমোদন দিলে দিনে মাত্র একবার আযান দেয়া হবে। দিনে জোহরের সময় মাত্র একবার আযান দেয়া হবে। এমনটা হলে সেটাও অনেক খুশির বিষয়। তিনি বলেছেন, স্থানীয় মসজিদগুলোর পরিচালনা পরিষদ নিউহ্যাম মুসলিম ফোরাম রমজানের পরে আযান দেয়ার অনুমতি চেয়ে আবেদন করার কথা বিবেচনা করছে। এ উদ্যোগের সঙ্গে লন্ডনের কমপক্ষে ২৫টি মসজিদ ও সারাদেশের কয়েক ডজন মসজিদ গত চার সপ্তাহে যুক্ত হয়েছে। এই বরো’তে সবচেয়ে বড় মসজিদ আল মানার থেকে লন্ডনের কেনসিংটন এবং চেলসি কাউন্সিল রমজানে আযান দেয়ার অনুমোদন দেয়। এরপর থেকেই স্থায়ীভাবে আযান দেয়ার উদ্যোগ শুরু হয় তাদের মধ্যে। এ ঘটনার পরে প্রতিদিন সন্ধ্যায় এবং শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজের সময় মসজিদ থেকে আযান দেয়া অনুমোদন দেয় উত্তর-পূর্ব লন্ডনের ওয়ালথাম ফরেস্ট কাউন্সিল। এই বরো’তে সবচেয়ে বড় মসজিদের অন্যতম ওয়ালথাম ফরেস্ট ইসলামিক এসোসিয়েশন। তারা মাইকে আযান দিতে থাকে, যা এক মাইল ব্যাসার্ধের ভিতরে শোনা গেছে। এরপর ভিডিও ফুটেজে মুয়াজ্জিনদেরকে আযান দিতে দেখা গেছে। তারা মসজিদ থেকে আযান দিচ্ছেন। সেই আহ্বান ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। এই বরো’তে অন্য মসজিদগুলোতে আযান দিতে ব্যবহার করা হয় লাউড স্পিকার। কনসার্টে যেসব স্পিকার ব্যবহার করা হয় তেমন স্পিকার বসানো হয় মসজিদের বাইরের দরজায়। তারপর আযান দেয়া হয়।
ওয়ালথাম ফরেস্ট ইসলামিক এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রাজা ইলিয়াস বলেছেন, আমার ইচ্ছে করে যদি কমপক্ষে জুমার নামাজের আযানটা আমরা দিতে পারতাম অথবা দিনে একবার আযান দিতে পারতাম! তবে এটা আমার প্রত্যাশা। আমার এই প্রত্যাশা স্থানীয় কাউন্সিল বা প্রতিবেশীদের ওপর জোর করে চাপিয়ে দিতে চাই না। একেজন মুসলিম হিসেবে এটা আমার চাওয়া।
এ বিষয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলছেন মুসলিম নেতারা। কাউন্সিলের নেতারা বলেছেন, কমিউনিটির কাছ থেকে তারা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছেন। তবে কিছু কিছু আপত্তি তো এসেছেই। কেনসিংটন অ্যান্ড চেলসি কাউন্সিলের কনজারভেটিভ নেতা কার্ল এলিজাবেথ ক্যাম্পবেল বলেছেন, আমরা এ ব্যাপারে বাস্তবেই ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি।